শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল -|- ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

পটুয়াখালীতে শিক্ষক বদলীর রমরমা বাণিজ্য

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০১৯

জানুয়ারী থেকে মার্চ মাস সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলীর মৌসুম। চলতি বছর এই মৌসুমকে ঘিরে পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চলছে রমরমা বাণিজ্য। আন্তঃ উপজেলা, আন্তঃ জেলা কিংবা আন্তঃ বিভাগে কাঙ্খিত বিদ্যালয়ে বদলীর জন্য প্রত্যেক শিক্ষককে গুনতে হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত টাকা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরাসরি এই বদলী বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পটুয়াখালী জেলার ৮ উপজেলা থেকে চলতি বছর দুই সহস্রাধিক শিক্ষক সুবিধাজনক বিদ্যালয়ে বদলীর জন্য আবেদন করেন। নিয়মানুযায়ী জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে বদলীর জন্য সুপারিশ করবেন সংশ্লিষ্ট উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা। কিন্তু জেষ্ঠ্যতা লংঘন করে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক বদলীর জন্য সুপারিশ করার অভিযোগ উঠেছে একাধিক বিদ্যালয়ে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাউফল, দশমিনা, মির্জাগঞ্জ, কলাপাড়া ও গলাচিপার একাধিক ভুক্তভোগী শিক্ষক বলেন, আন্তঃ উপজেলা বদলীর ক্ষেত্রে শিক্ষা অফিসে আবেদন করার পর ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দাবী করা হয়। এই ঘুষ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সমন্বয়ে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে।

বাউফলের এক শিক্ষক বলেন, আমি বদলীর জন্য পটুয়াখালী শিক্ষা অফিসের এক অফিস সহকারীর কাছে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। তিনি আমার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। পরে খবর পেয়েছি যিনি ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছেন তাকে বদলী করা হয়েছে। ওই শিক্ষক আরও বলেন, যাকে বদলী করা হয়েছে তার চেয়ে আমি সিনিয়র।

দুমকির এক শিক্ষক বলেন, পটুয়াখালী শিক্ষা অফিসে গেলে টাকা ছাড়া কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলা যায় না। যারা টাকা নিয়ে যায় না তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে অফিস থেকে বের করে দেয়া হয়।

পটুয়াখালীর এক শিক্ষক নেতা বলেন, সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্ব দেয়ার পর সহকারি শিক্ষক পদ শূণ্য হয়। ওই সব শূণ্য পদে সাময়িক সময়ের জন্য শিক্ষক পদায়নের নামে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক বদলী করা হচ্ছে। সেখানেও জেষ্ঠ্যতা লংঘন করে জুনিয়র শিক্ষকদের বদলী করা হচ্ছে।
কাঙ্খিত বিদ্যালয়ে বদলী হতে না পেরে বাউফলের এক শিক্ষক বলেন, আমার আবেদন গায়েব করে এক জুনিয়র শিক্ষককে বদলী করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ ছাইয়াদুজ্জামান বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। যদি কোন ভুক্তভোগী শিক্ষক আমার কাছে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ নিয়ে আসে, তাহলে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।