আজ ১৬ই জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ || ২রা মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান খান, কক্সবাজার:
উদ্বোধনের দিনেই চরম অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা দিয়ে শুরু করেছে পর্যটনবাহী “বে-ওয়ান” জাহাজের যাত্রা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর থেকেই সবধরণের কার্যক্রমেই পরিলক্ষিত হয়েছে অনিয়মের। বিশেষ করে অতিথিদের মাঝে শ্রেণী বৈষম্য করাই চরম অসন্তুষ দেখা দিয়েছে অন্যান্য অতিথিদের মাঝে।
রবিবার (২০ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় চট্টগ্রামের আনোয়ারার মেরিন একাডেমির জেটিঘাটে জাহাজটির উদ্বোধন শেষে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। এই জাহাজটি কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে নিয়মিত যাত্রী পরিবহণে যুক্ত থাকবেন বলে জানা যায়।
চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমী ঘাটে জাহাজটির উদ্বোধন করেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহবুব চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজা-২ এর সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার- ১ এর সংসদ সদস্য জাফর আলম, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান সহ নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ৬০০/৭০০ অতিথি নিয়ে যাত্রা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেেই ভিআইপি প্রথার প্রচলন শুরু হয় জাহাজটিতে। সাধারণ অতিথিদের সাথে খারাপ আচরণ করা শুরু করে কর্তৃপক্ষের লোকজন। পুরো জাহাজ জুড়ে ছিলনা কোন নিয়ম শৃঙ্খলা। পর্যাপ্ত খাবার ও পানি থাকা সত্বেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিথিদের খাবার ও পানি দেয়া হয়নি। এতে করে বয়স্ক, ডায়াবেটিসের রোগী ও শিশুদের বেশ কষ্ট পোহাতে হয়েছে।
জাহাজের দ্বিতীয় তলায় ক্যান্টিনে (বুফে) খাবার দেয়ার নাম করে কর্তৃপক্ষরা শুরু করেছে আরেক নাটকীয়তা। এ নাটকীয়তার গ্যাড়াকলে পড়ে সারারাত খাবার সংকটে পড়েছে সাধারণ অতিথিরা। বিশেষ করে খাবার পানির তীব্র সংকটে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় অনেককে। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত খাবারের জন্য কেন্টিনের সামনে খুধার্ত মানুষের হাহাকার করতে দেখা গেছে। ক্ষুধার তাড়নায় একটি জিলেপি ও পিঠার জন্য শত শত মানুষের হাত পাততে হয়। এই করুণ অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য যাত্রীরা চরমভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই হাহাকার উপেক্ষা করে তথাকথিত ভিআইপিদের জন্য খাবার নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষের লোকজন। এসময় কয়েকজন অতিথি প্রতিবাদ করলে উল্টো যাত্রীদের দিকে তেড়ে আসে জাহাজ কর্তৃপক্ষের কয়েকজন।
আক্ষেপ করে শাহরিয়ার, মিজান, আহসান সহ কয়েকজন যাত্রী বলেছেন- “আমাদের সাথে ছোট ছোট বাচ্চা আছে। খাবারের জন্য তারা কান্না করছে। জাহাজে বয়স্ক যাত্রীও আছে। জাহাজ কর্তৃপক্ষ বলেছিল জাহাজে পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। তাই নিজেদের কাছে খাবার রাখা হয়নি। এখন সাগরের মাঝপথে নিরুপায় হয়ে গেলাম। কোনমতে কক্সবাজার পৌঁছাতে পারলেই হলো।