আজ ১লা মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ || ১৬ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
মহিউদ্দীন চৌধুরী,বিশেষ প্রতিনিধি:
পটিয়ায় মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ১১৫ গৃহহীন শনিবার সরকার প্রদত্ত নিজ নিজ ঘরের চাবি ও দলিল বুঝে পেয়েছে।
গতকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশের ন্যায় পটিয়ায়ও এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। পটিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমদ, বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সহকারী কমিশনার ভূমি ইনামুল হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম সামশুজ্জমান চৌধুরী, জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান দেবব্রত দাশ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ডা: তিমির বরন চৌধুরী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম শিরু প্রমুখ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, আজকে সত্যি আমার জন্য একটি আনন্দের দিন। কারণ এ দেশের যারা সব থেকে বঞ্চিত মানুষ, যাদের কোনো ঠিকানা ছিল না, ঘর-বাড়ি নেই। আজকে তাদের অন্তত একটা ঠিকানা, মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে পেরেছি। এক সঙ্গে এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে ঘর দেওয়ার নজির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি না পৃথিবীর কোনো দেশে কখনো অথবা আমাদের দেশে কোনো সরকার এত দ্রুত এতগুলো ঘর করেছে কিনা?।
সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার দৃঢ় প্রত্যয় পুর্নব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। আমরা সবার জন্য ঠিকানা করে দেবো, সবাইকে ঘর করে দেবো। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ যেন সুন্দর ভাবে বসবাস করতে পারে সেটাই আমার লক্ষ্য। করোনা মহামারির কারণে নিজের হাতে এসব ঘরের দলিল হস্তান্তর করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একান্ত ভাবে ইচ্ছে ছিল নিজের হাতে ঘরের দলিল আপনাদের হাতে তুলে দেবো। করোনার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আমরা ডিজিটালি হস্তান্তর করছি। ভূমিহীন-গৃহহীনদের ঘর করে দিতে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
৬৯ হাজার ৯০৪ পরিবারের মধ্যে ৬৬ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ খাস জমির মালিকানা দিয়ে বিনা পয়সায় দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ব্যারাকের মাধ্যমে ২১টি জেলার ৩৬ টি উপজেলায় ৪৪ প্রকল্পের মাধ্যমে তিন হাজার ৭১৫ টি পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হয়। প্রতিটি ঘর দুই কক্ষ বিশিষ্ট। এতে দুটি রুম ছাড়াও সামনে একটি বারান্দা, একটি টয়লেট, একটি রান্নাঘর এবং একটি খোলা জায়গা থাকবে। পুরো ঘরটি নির্মাণের জন্য খরচ হয় এক লাখ ৭১ হাজার টাকা এবং মালামাল পরিবহনের জন্য চার হাজার টাকা দেওয়া হয় প্রতি পরিবারকে। সারা বাংলাদেশে ঘরও নেই, জমিও নেই এমন পরিবারের সংখ্যা দুই লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১।
ভিটেমাটি আছে, ঘর জরাজীর্ণ কিংবা ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ২৬১। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারা বাংলাদেশে যে তালিকা করা হয়েছে সব মিলিয়ে সেই তালিকায় আট লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবার রয়েছে বলে জানা গেছ।
পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পটিয়ায় ১১৫ গৃহহীনকে ঘর দেওয়া হচ্ছে। তারমধ্যে ৬০ পরিবারকে আজ শনিবার চাবি ও দলিল বুঝিয়ে দেওয়া হল। বাকীঘর গুলো র্নিমানাধীন রয়েছে।