আজ ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
মহামারী করোনার কারণে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সাতকানিয়ার ব্যবসায়ীরা। পবিত্র রমজান মাসের আগে হঠাৎ করে লকডাউনের ঘোষণায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের বাজারের আশায় থাকা ব্যবসায়ীদের এবারও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লকডাউন তুলে নেয়ার আহবান জানিয়েছেন। প্রয়োজনে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ব্যবসা করার কথাও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের ব্যাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র
কেরানীহাট রয়েছে কাপড়ের সবচেয়ে বড় বাজার নিউমার্কেট। এই মার্কেটে প্রতিবছর ঈদকে ঘিরে কয়েকশত কোটি টাকার লেনদেন হয়। গতবছর করোনার কারণে সাতকানিয়ার ব্যবসায়ী ধ্বস নামে। করোনার প্রকোপ কমার কারণে এবছরের শুরু থেকে নতুনভাবে বিনিয়োগ করে ব্যবসায়ীরা।
নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি শহর মুল্লুক রাশেদ বলেন,কেরানীহাট নিউমার্কেট পুরোটা ঈদমুখী বাজার। ঈদে শত কোটি টাকার ব্যবসা হয় এই মার্কেটে। গতবছর আমাদের কোন ব্যবসা হয়নি। এবার ব্যবসার আশায় ব্যাংক লোন, বিভিন্ন শর্তে স্বজন থেকে লোন এমনকি জায়গা বিক্রি করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। সবাই বুকবেধে নেমেছিল। লকডাউন ঘোষনার পর সবার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা ব্যবসা করতে চাই। করোনার নয়, আমরা ডালভাতের অভাবে মারা যাবো। গতবছর করোনায় আমাদের ক্ষুদ্র কোনো ব্যবসায়ী প্রণোদনা পায়নি। যাদের সিসি আছে এবং নিয়মিত রেখেছে তারা শুধু প্রনোদনা পেয়েছে। এবারও একই হলে আমাদের সবাইকে পথে বসতে হবে।
নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক নাজির হোসেন সিকদার বলেন, গতবছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে লোন নিয়েছে। সেই লোনের বোঁজা এখনো টানছেন। এখন লকডাউন ঘোষনা করেছে সরকার। সেটা কখন শেষ হয় নির্ধারণ করে বলা যাচ্ছে না। এভাবে চললে আমাদের জীবিকা কিভাবে চলবে? আমরা ব্যবসায়ীরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করতে চাই।তিনি বলেন, যারা সরকারি চাকুরি করে তারা বেতন পাবে। আমাদের কি হবে? কি করে চলবো? স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা ব্যবসা করবো। সংসার যাতে চালাতে পারি।
একই বিষয়ে কেরানীহাট সিটি সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সরকার যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখলে ব্যবসায়ীরা বাঁচবে। সীমিত আকারে চলাফেরার সুযোগ দেয়া প্রয়োজন। করোনায় ৯০ শতাংশ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সরকার যদি লকডাউনের সময় নির্ধারণ করে দেয় তাহলে ব্যবাসায়ীরা কিছুটা বাঁচবে। মার্কেটের সময় লিমিট করে দিতে পারে। জরুরি কাজ ছাড়া মানুষজনকে বের না হতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। কাজের লোকজনের যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেটাও দেখা উচিত।
শুধু পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে নয়, খুচরা ব্যবসায়ীরা ভুগছেন লকডাউনের আতঙ্কে। মজুদ করা পণ্যের সঠিক দাম না পাওয়ার আশঙ্কা যেমন আছে তেমনি পণ্য নষ্ট হওয়ার আতঙ্কও আছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। সীমিত আকারে হলেও দোকানপাঠ খোলা রেখে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ চান খুচরা ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী হারুন বলেন, করোনার সঙ্গে অবিরাম যুদ্ধে টিকে থাকতে প্রথম থেকেই সরকারের সব সিদ্ধান্ত মেনে আসতেছে ব্যাবসায়ীরা। ব্যাবসা বন্ধ থাকলে ও দোকান ভাড়া ভ্যাট টেক্স ব্যাংকের লোন ও ট্রেড লাইসেন্স সহ পুজি থেকে সব কিছু বহন করে আসতেছে ব্যাবসায়ীরা রমজানের ব্যাবসা থেকে উঠে আসবে এই আশায়। লকডাউন এর কথা শুনে মাতায় হাত সবার। শর্তসাপেক্ষে মিল কারখানা খোলা থাকলে দোকান খোলা থাকলে সমস্যা কোথায়। ব্যাবসায়ীরা। সরকারের কাছে আকুল আবেদন আমরা স্বাস্থবিধি মেনে যে কোন শর্ত মেনে দোকান খোলা রাখতে চাই।