আজ ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
মো. এরশাদ আলম, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পারিবারিক কলহের জেরে ভাবীর ছুরিকাঘাতে দেবর খুন হয়েছে। বুধবার (২৩ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কুমিরাঘোনা জঙ্গলী পীর পাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহতের নাম মো. ইউনুছ (৪০)। তিনি ওই এলাকার মৃত আলী আহমদের পুত্র ও তিন সন্তানের জনক।
এ ঘটনার তিন ঘন্টার মধ্যে জড়িত স্বামী-স্ত্রীকে প্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নিহতের বড় ভাই মো. ইউসুফ (৪৮) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী নাছিমা আক্তার (২০)।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুুহাম্মদ রফিক উদ্দিন জানান, ইউসুফের স্ত্রী নাছিমাকে তাঁর ছোট ভাই ইউনুছ ঘটনার একদিন আগে পারিবারিক ঝগড়াঝাঁটির এক পর্যায়ে মারধর করেছিল।
মারধরের ঘটনাটি নাছিমার স্বামী ইউসুফ স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানকে জানান এবং তাঁর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার দিন বিকেলে থানা পুলিশের একটি টিম উক্ত বাড়ীতে তদন্ত করতে গিয়ে সবাইকে শান্তনা দিয়ে স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানসহ শুক্রবার বসে বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করার কথা বলে চলে আসেন।
পুলিশ চলে আসার পরে সন্ধ্যায় আবারো শুরু হয় দু’ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি ও হাতিহাতি। হাতাহাতির এক পর্যায়ে বড় ভাইয়ের স্ত্রী নাছিমা আকতার ছুরি বের করে দেবরকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
নিহতের ছোট ভাই হেলাল উদ্দিন জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে তাঁর বড় ভাইকে ভাবী নাছিমা আক্তার ছুরিকাঘাত করেছে। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাফিকুল ইসলাম জামান জানান, ঘটনারদিন সকালে নিহত ইউনুছের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেন ভাবী নাছিমা আক্তার। তারই প্রেক্ষিতে বিকেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়েছিলেন। পুলিশ চলে আসার পর উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির হয়। এক পর্যায়ে ভাবী নাছিমা আক্তার দেবরকে ছুরিকাঘাত করে।
নিহতের স্ত্রী রেহেনা আক্তার বুলু জানান, ইউসুফের দুই সংসার রয়েছে। প্রথম স্ত্রী চট্টগ্রাম শহরে ও দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে থাকে। স্বামী সবসময় কাছে না থাকার সুযোগে দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে বিভিন্ন ধরণের মানুষ যাওয়া-আসা করে। তারই প্রতিবাদ করায় তাঁর স্বামীকে ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আবদুল্লাহ আল রেজওয়ান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ছুরিকাঘাতে আহত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নিহতের লাশ পুলিশ থানা হেফাজতে নিয়ে গেছে।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) জাকের হোসাইন মাহমুদ জানান, ছুরিকাঘাতে নিহতের ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। এই ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।