বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল -|- ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

টুং টাং শব্দে মুখরিত সাতকানিয়ার কামার পল্লী

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১

নুরুল আমিন:
ঈদকে সামনে রেখে কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় কামার পল্লী। কোরবানির পশু জবাই ও গোশত প্রস্তুতে ব্যবহৃত দা, বঁটি, ছুরিসহ প্রয়োজনীয় অন্যসব উপকরণ তৈরিতে এখন দিনরাত কাজ করছেন শ্রমিকরা। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিরামহীনভাবে জ্বলছে কামার দোকানের চুলার আগুন।

সাতকানিয়ার বিভিন্ন কামার পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে টুং টাং শব্দ। কেউ ভারি হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন দগদগে লাল লোহার খ-, আবার কেউ শান দিচ্ছেন ছুরি কিংবা বঁটি, কেউবা আবার কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন। কোরবানির সময় তাদের আয় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তাই সারাবছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকেন তারা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির এক মাস আগে থেকেই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, ঈদের সময় তাদের বেচা-বিক্রি ভাল হয়। তারা সাধারণত পাঁচ ধরনের বঁটি, ছয় রকমের দা, ১৬ ধরনের ছুরি, সাত ধরনের কাবাব ছুরি, ২০ ধরনের চাপাতি, ১২ ধরনের জবাই ছুরি তৈরি করেন তারা। এছাড়া কুঠার ও ধার দেয়ার জন্য এক ধরনের স্টিকও বিক্রি করেন। প্রকারভেদে বঁটির দাম চার শ’ থেকে সাড়ে চার হাজার, গরু জবাইয়ের ছুরি পাঁচ শ’ থেকে ১৮শ’, চাপাতি ছয় শ’ থেকে দুই হাজার, কাবাব ছুরি পাঁচ শ’ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

এছাড়া অন্যান্য ছুরি দুই শ’ থেকে পাঁচ শ’ টাকায় বিক্রি করা হয়। কুঠার সাধারণত কেজিদরে বিক্রি হয়। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ঈদ সিজনে প্রতিটি পণ্যের দাম কিছুটা বেড়ে যায়। দোকানিরা জানান, কোরবানির ১০ দিন আগে বঁটি, দা, ছুরির বিক্রি বেড়ে যায়। এ সময় গড়ে এক লাখ টাকার মতো বিক্রি হয়। আর চাঁদ রাতে এক থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ভাল লোহার বঁটি সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা দাম পড়ে। আর সবচেয়ে ভাল ছুরি দুই হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। কিছু জিনিস আছে কেজিদরে বিক্রি হয়। তিনি আরও জানান, ঈদের ১০ দিন আগে থেকে বিক্রি ভাল হয়। এ সময় দোকানভেদে এক লাখ টাকার চেয়েও বেশি বিক্রি করতে পারে।

কামার বাবুল কর্মকার বলেন, পৈত্রিক পেশা হিসেবে লোহা পেটানোর কাজ করে আসছি। বৃদ্ধ বয়সেও কাজ করে যাচ্ছি। তবে আমার সন্তানদের কেউ এ পেশায় আসেনি এবং তাদের আসতেও বলিনি। কারণ লোহা-কয়লার দাম যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে আমাদের তৈরি পণ্যের দাম বাড়েনি। এছাড়া কামারদের মানুষ এখন আর সম্মান দেয় না। তিনি আরও বলেন, কয়লা খনির কয়লা আমরা এখন পাই না। গাছের কয়লা দিয়ে কাজ করতে।