রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল -|- ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

অপরূপ রূপে রূপায়িত বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৯

বাঁশখালী প্রতিনিধি:

সুদীর্ঘ সৈকত জুড়ে চিক চিক করা বালি, সমুদ্রের নোনা ঢেউ আঁচড়ে পড়ে তটরেখায়। গোধূলি বেলায় রক্তিম সূর্যটার সাগরের বুকে মিলিয়ে যাওয়ার মুগ্ধতা। সেই সোনালী আলোকচ্ছটায় দীর্ঘ বেলাভূমিটা মনে হয় মুঠো মুঠো সোনা ছড়ানো। দূরের ঘন ঝাউবনের সঙ্গে গোধূলি বেলার এই রূপের সখ্যতা যেন এক স্বর্গীয় দৃশ্যের সৃষ্টি করে। ঝাঁকে ঝাঁকে শ্বেত গাঙচিলেরা উড়ে চলে সমুদ্রের নীলিমায় হারিয়ে যায়। শিল্পীর তুলিতে আঁকা এমনই নিখুঁত ছবির মত সৌন্দর্যের দেখা মিলবে চট্টগ্রামের বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতে।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সুদীর্ঘ ৩৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই সমুদ্র সৈকত বিস্তৃত। বাঁশখালী ছনুয়া, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, খানখানাবাদের উপকূল জুড়ে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে এই সৈকতের অবস্থান। কক্সবাজারের পর একমাত্র এই বাঁশখালী সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত। সৈকতে সারিসারি ঝাউ গাছ। ঘন ঝাউ বাগান। জোয়ার-ভাটার ঢেউয়ের শব্দ পর্যটকের মন কাড়ে। সমুদ্র লাগোয়া অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে নিয়ে যাবে নির্জনতার জগতে। শেষ বেলায় সমুদ্রের জলরাশির ভেতরে সূর্যের ওপরের অংশের হালকা রক্তিম বৃত্তটা ক্রমেই অস্পষ্ট হতে থাকে। লাল বর্ণ রশ্মিহীন এই সূর্যটা পশ্চিম আকাশে নিয়ে আসে এক অপরূপ শোভা। আকাশের ক্যানভাসে আঁকা বৃহৎ আকৃতির সূর্য, নিচে সমুদ্রের নীল জল, সুদীর্ঘ বেলাভূমি আর এরই পাশে ঘন সবুজ ঝাউবনের সমন্বয়ে বাঁশখালীর সমুদ্র সৈকত ফিরে পায় অপরূপ সৌন্দর্য। এ যেন কল্পনার সৌন্দর্যকেও হার মানায়।


বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত

এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে লাল কাঁকড়া। যদি খুব সকালে সৈকত যাওয়া যায় তবেই দেখতে পারবেন ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়া। সমুদ্রের ভেজা বালির উপর লাল কাঁকড়া দেখলে লাল কার্পেটের মত লাগে। এই লাল কাঁকড়া সৈকতের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।

এখান থেকে সরাসরি অসাধারণ সূর্যাস্তের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। সমুদ্রের সঙ্গে গা ঘেঁষে রয়েছে কুতুবদিয়া চ্যানেল, আর নিকটেই দ্বীপ কুতুবদিয়া। চাইলে এই দ্বীপটি ঘুরে আসতে পারবেন। চট্টগ্রাম থেকে বাঁশখালী যাবার পথটাও বেশ আকর্ষণীয়। সৈকতের পাশাপাশি আছে চা বাগান, ইকো পার্ক। ১৯৯১ সাল থেকে বেশ কয়েকটা ঘূর্ণিঝড়ে ইকোপার্ক সহ বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারপরেও যথেষ্ট আকর্ষণীয় একটা স্থান এটি। এখানকার সৈকত কুয়াকাটা বা কক্সবাজারের চেয়ে অনেক বেশি প্রশস্ত, তবে বর্ষায় তা কমে যায়।

বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত যাওয়ার উপায়:

ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড এ চট্টগ্রাম-গামী বাসগুলো পেয়ে যাবেন। এস আলম, শ্যামলী, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, ঈগল, এনা, সোহাগ টি আর প্রভৃতি এসি ও নন-এসি বাস চট্টগ্রাম যায় প্রতিদিন। ভাড়া পড়বে ৪২০ থেকে ১১০০ টাকা।

এর পরে প্রথমে কর্ণফুলীর তৃতীয় সেতু বা নতুন ব্রিজ যেতে হবে। সেখান থেকে বাস অথবা লোকাল সিএনজিতে গুনাগারি বাজার, বাসে নেবে ৬০ টাকা, সিএনজি নেবে ৭০-৮০ টাকা প্রতিজন। গুনাগারি বাজার থেকে লোকাল সিএনজিতে ৩০-৪০ টাকায় প্রতিজন অথবা ২০০-২৫০ টাকায় রিজার্ভ সিএনজি করে বাঁশখালী যাবেন। ফিরে আসার সময় গাড়ি পেতে সমস্যা হতে পারে, তাই রিজার্ভ করে যাওয়া আসার ব্যবস্থা করলেই ভাল। দরাদরি করলে সিএনজিতে কম পাবার সুযোগ আছে।