আজ ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিশ্বের কোথাও প্রথম চাঁদ দেখার সংবাদের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে মিল রেখে আজ মঙ্গলবার (২০ জুলাই) দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশসহ প্রায় ৬০ গ্রামে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশের জাঁহাগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। দরবার শরিফের অনুসারীরা বিশ্বের কোথাও প্রথম চাঁদ দেখার সংবাদের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও পশু কোরবানি দিয়েছেন।
জানা যায়, সুফি সাধক সৈয়্যদ মাওলানা মোখলেসুর রহমান (র.) শাহ’র জাহাঁগিরী ২০০ বছর আগে বিশ্বের কোথাও প্রথম চাঁদ দেখার সংবাদের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহার নামাজ পালন করার নিয়ম প্রর্বতন করেন। তার সেই দেখানো পথে আজ অবধি এ নিয়ম মেনে আসছেন তার ভক্ত ও অনুসারীরা। এরপর থেকে দরবারের মুরিদরা একদিন আগে থেকে রোজা রাখা ও ইদ উদযাপন করে আসছেন।
সাতকানিয়ার মির্জারখীল দরবার শরীফের সৈয়্যদ মাওলানা আবদুর রহমান শাহ জাহাঁগিরী ও চন্দনাইশ কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের শাহজাদা মাওলানা মো. মতি মিয়া মনসুর জানান, আমরা হানাফী মাযহাবের অনুসারী হিসেবে বিশ্বের কোথাও প্রথম চাঁদ দেখার সংবাদের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে মিল রেখে সুফি সাধক সৈয়্যদ মাওলানা মোখলেসুর রহমান (র.) শাহ’র জাহাঁগিরীর দেখানো পথ অনুসরণ করে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে আসছি।
চন্দনাইশ জাঁহাগিরিয়া দরবার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চন্দনাইশ উপজেলার জাঁহাগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের বর্তমান পীর সৈয়দ মোহাম্মদ আলী (ম.জি.আ.) প্রদর্শিত এ পথ অনুসরণ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যেসব গ্রামে ঈদুল আযহার পালন করবেন সেগুলোর মধ্যে চন্দনাইশ পৌরসভার বুলার তালুক, হরিনার পাড়া, ফকির পাড়া, সর্বল কাজী বাড়ি, চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, হারলা, বাইনজুরি, কানাইমাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, ধোপাছড়ি , দোহাজারি, জামিজুরি, পশ্চিম এলাহাবাদ, উত্তর কাঞননগর, জুনিঘোনা, আব্বাসপাড়া, মাঝের পাড়া, দিঘির পাড়া, কুন্দুপাড়া, কেশুয়া, মোহাম্মদপুর, উত্তর হাশিমপুর, ছৈয়দাবাদ, খুনিয়ারপাড়া, শ্রীমাই, রুপকানিয়া, জলদী, গুনাগরি, কালিপুর, গন্ডামারার, মিরিঞ্জিরতলা, ছনুয়া, সাধনপুর, তৈলারদ্বীপ, বাথুয়া, বারখাইন, চরণদ্বীপ, খরণদ্বীপ, বড়হাতিয়া, চুনতি, পুটিবিলা, উত্তর সুখছড়ি, বাংলাবাজার, মইশামুড়া, খোয়াছপাড়া, বাজালিয়া, কাঞ্চনা, গাটিয়াডাঙ্গা, পুরানগড়, মনেয়াবাদসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের লক্ষাধিক অনুসারীগণ ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেছে মঙ্গলবার।
এছাড়া বোয়ালখালী, হাটাহাজারী, সন্দীপ, ফটিকছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষংছড়ি, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, হাতিয়া, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, নরসিংদি, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যেখানে মির্জাখীল ও জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী রয়েছেন তারাও ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেছে।
আজ মঙ্গলবার জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের সৈয়্যদ মো. আলীর ইমামতিতে ১ম জামাত সকাল ৮টায় ও দরবারের শাহজাদা মাওলানা মো. মনজুর আলীর ইমামতিতে ২য় জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় ইদগাহ ময়দানে ইদুল আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া সাতকানিয়া দরবার শরীফের সৈয়্যদ মাওলানা আবদুল হামিদ শাহ’র জাহাঁগিরী (নুরুল আরেফিন) ইমামতিতে মির্জাখীল দরবার শরীফে সকাল ৯টায় ও সৈয়্যদ মাওলানা ড. মাকসুদুর রহমান শাহ’র জাহাঁগিরী ইমামতিতে সকাল সাড়ে ৯টায় একই দরবারে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়াও এবছর করোনা ভাইরাসজনিত কারণে সরকারের বেধে দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি মানতে সাতকানিয়ার মির্জারখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশের জাঁহাগিরিয়া দরবার শরীফে ঈদের নামাজে না যাওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়েছে। অনুসারীদের যার যার এলাকায় ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করার জন্য বলা হয়েছে।