আজ ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ময়মনসিংহের কিংবদন্তী আজ শীতল বাবু।দীর্ঘ ৩৮ বছর সংগ্রাম করে অবশেষে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করেছেন শীতল সরকার।
শীতল এক হার না মানা লড়াকু মননের মানুষ।ময়মনসিংহ নগর নির্বাচনে টানা ৬ বার পরাজিত হয়েও দমে যাননি তিনি।বিজয় মুঠোবদ্ধ না করে ছাড়লেন না তিনি।ময়মনসিংহ নগরীর মানুষ শেষতক তার সংগ্রাম ও ধৈর্য্যের মূল্যায়ন করে ছাড়লেন।
দু’তিন বার পরাজয় বরণ করে সংসারের সর্বস্ব খুয়ানোর পর শীতল বাবুর স্ত্রী তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে চলে যান বাবার বাড়ি ভারতে অনেক আগেই।যাওয়ার সময় তাঁর স্ত্রীর গর্ভে থাকা সন্তানটি এখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ে।
স্ত্রীর অভিমানে চলে যাওয়ার বেলায় বলে যাওয়া ‘কোন দিন যদি তুমি নির্বাচন করে পাশ করতে পারো আমাকে আনতে যেও ‘-কথাটি বাস্তবায়নের জন্য উঠে পড়ে লেগে যান তিনি।তাছাড়া জনসেবার নেশা তো তার পূর্ব থেকেই ছিল।এর পর থেকে শীতল সরকার শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্যই লড়ছিলেননা,লড়ছিলেন অভিমানী স্ত্রী-সন্তানদের ঘরে ফিরিয়ে আনার জন্যও।
শীতল সরকার একপুত্র ও এক কন্যার জনক হয়েও পরাজয়ের গ্লানিতে তিনি সংসারের সুখ থেকেও বঞ্চিত ছিলেন,সন্তানদের কোলেও নিতে পারেননি বহুদিন।হাহাকারে বুক ভরে আছে তার।বিজয়ের ঘোষনার সাথে সাথে তার অশ্রুসিক্ত আনন্দ দেখে মনে হল,সিটি কাউন্সিলর নয়,যেন বিশ্বজয় করেছেন তিনি।সত্যিই এ জয় শীতল সরকারদের মত মানুষদের জন্য বিশ্বজয়ের সমান।
তিনি হারলেন,অটল রইলেন,আপনদের শূন্যতা চেপে কাজ করলেন,জিতলেন।আমাদের শেখালেন ধৈর্য্য ও সংযমের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়টি।
এদিকে হয়তো শীতল বাবুর স্ত্রী-সন্তানদের অভিমান ভেঙ্গেছে,এবার ময়মনসিংহবাসী আরো একটি মিলনমুখর পরিবেশ দেখবে বলে আশা আমাদের।শীতল বাবুদের ইতিহাস স্থায়ীত্ব লাভ করুক।