বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল -|- ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

টেকনাফে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তান্ডবে মেরিন ড্রাইভ ও সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন জায়গা লন্ডভন্ড

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২

 

এস,এন,কায়সার জুয়েল
কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফে আঘাত হেনেছে বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় “সিত্রাং’। সেই সাথে ভয়াল জলোচ্ছাসের ছোবল অব্যাহত আছে। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছাসের দুর্যোগের কবলে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে লণ্ডভণ্ড দশা। চলাচল দুর্ভোগ চরমে। যেকোন মুহুর্ত্বে মেরিন ড্রাইভ সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যায় ঝড়-জলোচ্ছাসের অগ্রভাগ আঘাত হানতে শুরু করে। মাঝরাতে মূল ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে। ‘সিত্রাং গতিবেগ ঘণ্টায় উঠে ঘণ্টায় ৮৮ থেকে সর্বোচ্চ ১০৫ কিলোমিটারে। “সিত্রাং’ ঘণ্টায় ২১ থেকে ৩৩ কি.মি. অর্থাৎ দ্রুত গতিতে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসলেও টেকনাফের অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সঙ্কেত ঘোষণা করা হয়।

পরবর্তীতে গত মধ্য রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর তান্ডবে সেন্টমার্টিন, সাবরাং, শাহপরীদ্বীপ জালিয়া পাড়া, টেকনাফ পৌরসভার ২,৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড ঝড়-জলোচ্ছাসে ডুবে গেছে। অনেক ঘরবাড়ী, লোকালয়, আমন ধানসহ ফসলি জমিরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও জলোচ্ছাসের ছোবলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাও ব্যাপক। এসকল ক্ষয়ক্ষতির কারণে টেকনাফ উপজেলায় জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ আরও ভেঙেচুরে যেতে পারে।

এর ফলে উপকূলে জনবসতি, ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতিরও ব্যাপক মাত্রায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল মধ্যরাত থেকে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে জলোচ্ছ্বাসের ছোবল শুরু হলে ।

সাবরাং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সোনা আলী জানান, বাড়িঘর, গাছপালা, রাস্তাঘাটসহ কয়েক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেড়িবাঁধের উপর থেকে পানি ঢুকে অনেক ঘরবাড়িও ডুবে যায়।

পৌরসভা মেয়র হাজী মোঃ ইসলাম জানান, পৌরসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জালিয়া পাড়া এলাকায় ৩০০ পরিবারে পানি ঢুকেছে। বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় দুইশ বাড়িঘর। হাস মুরগি জোয়ারের পানিতে ভেসে চলে গেছে। এছাড়াও একটি গাছ ভেঙ্গে একজন মহিলা আহত হয় বলে জানা যায়।

টেকনাফ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুবীর কুমার দত্ত জানান,বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় “সিত্রাংসের আঘাতে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য নেওয়ার পর তালিকা চুড়ান্ত করে জেলায় পাঠানো হবে। গতরাত থেকে টেকনাফ সাইক্লোন সেন্টারে যারা রাত্রে থাকছিল তাদেরকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার তৈরি করে প্যাকেটের মাধ্যমে ৫ শ জনকে বা ৬০০ জনকে খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ এরফানুল হক চৌধুরী জানান, যেখানে যেখানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেখানকার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সকল তথ্য সংগ্রহ করে আমরা জেলায় পাঠিয়ে দিব। পাশাপাশি মেইন ড্রাইভে যে ভাঙ্গন হয়েছে সে বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছে তারা অতিশীঘ্রই মেরিন ড্রাইভ সংস্কারের কার্যক্রম শুরু করবে।