আজ ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীনঃদ্বীনি শিক্ষা আল্লাহর কাছে মর্যাদা বৃদ্ধির প্রথম উপায়। সৃষ্টিকর্তা বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে ইলম বা জ্ঞান প্রদান করা হয়েছে তাদের মর্যাদা আল্লাহ বাড়িয়ে দেবেন (সূরা: মুজাদালা, আয়াত- ১১)।হাদীস শরীফে এসেছে, ইলম শিক্ষা করার জন্য পথ চলা, হাঁটা, কষ্ট করা ইত্যাদিও ইবাদাত। এগুলির মর্যাদা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত বেশি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, (বুখারি-১/৩৭, মুসলিম-৪/২০৭৪)।
দ্বীনি শিক্ষা অর্জনকারীর মর্যাদা সম্পর্কে জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত- রাসূল (সা:) ইরশাদ করেন- “আলিম ও আবেদের পুনরুত্থান হবে। অত:পর আবেদকে বলা হবে তুমি জান্নাতে যাও। আর আলেমদেরকে বলা হবে তুমি দাঁড়াও, যাতে তুমি যে শিক্ষা দিয়েছো সে কারণে সুপারিশ করতে পার”। (বায়হাক্বী-১৭১৭)
দ্বীনি শিক্ষা অর্জনের বড় প্লাটফর্ম হচ্ছে মাদরাসা।মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত লোকেরা তাহজিব-তমদ্দুন, কৃষ্টি-সভ্যতা, দীন-ঈমান, ইজ্জত-আবরু ইত্যাদি সংরক্ষণে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত লোকদের অনৈতিক কাজে যেমন চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ব্যভিচার, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক ইত্যাদির সাথে সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ করার মতো নজির তেমন পাওয়া যায় না।
সৎ, সাহস,দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গঠন করে এবং পরোপকারী, কল্যাণকামী ও আল্লাহর প্রতি অনুরাগী হওয়া কিংবা আদর্শ জাতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে চন্দনাইশের ঐতিহ্যবাহী পরিবারের প্রধান আকর্ষণ মুফতি শফিউর রহমান (রহ) নিজ বাড়ীর পাশে জোয়ারা ইসলমিয়া ফাজিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।অত্র মাদরাসায় যারা দ্বীনি শিক্ষায় দীক্ষিত হয়েছেন তথা কুরআন হাদীসের দরস নিয়েছেন তাদের সুদীর্ঘ তালিকা রয়েছে। এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিষ্যগণের মধ্যে বিভিন্ন মতের, বিভিন্ন পথের, বিভিন্ন আদর্শ ও মতাদর্শের,বিভিন্ন মাযহাব ও বিভিন্ন তরীকতের অনুসারী রয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদরাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ মুহাদ্দিস, প্রফেসর হিসেবে অনেক ছাত্রই আজ নিয়োজিত। এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিষ্য বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়া দেশের বাইরেও অনেক ভাল ও গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত। দেশের প্রশাসনিক লোকদের মধ্যে অসংখ্য ছাত্র আছে।উল্লেখ্য জোয়ারা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্ররা নানাভাবে ধর্মীয় ও সামজিক ও রাষ্ট্রীয় নানাক্ষেত্রে খেদমত আন্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এটা একটি সফল ও আদর্শ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাস্তব প্রতিচ্ছবি।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন যারা।
(১) মুফতি শফিউর রহমান (রহ):
মুফতি শফিউর রহমান (রহ) ১৯০৪ সালে ১লা জানুয়ারী চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ০৬ বৎসর বয়সে তাঁর শ্রদ্ধেয়া মাতা মারা যান। মাতৃহারা এ শিশু স্থানীয় আলেমগণের নিকট আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন। অতঃপর চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মাদরাসায় ভর্তি হন এবং তিনি বিভিন্ন জামাতে কৃতিত্ব সহিত উত্তীর্ণ হন। একই সাথে সরকারী বৃত্তি লাভ করেন। উচ্চতর শিক্ষা ও ইসলামী শিক্ষা অর্জনের উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে গমন করেন। কলকাতা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করেন। উক্ত মাদরাসায় অধ্যাপনায় নিয়োজিত প্রখ্যাত আলেম ও স্বনামধন্য মুহাদ্দিস ও ফকীহগণের সান্নিধ্যে তিনি ইসলামের বিভিন্ন দিক ও বিষয়ের উপর প্রভৃতি জ্ঞান অর্জন করেন। ফিকাহ ও ফরায়েজ শাস্ত্রে তিনি একজন ইমাম হিসেবে বিবেচিত হন। ফিকাহ শাস্ত্রে তিনি অসাধারণ পাণ্ডিত্য ও অভিজ্ঞতার অধিকারী হন। তাঁর ফতোয়া ও ফরায়েজ এত বলিষ্ঠ ও তথ্যপূর্ণ যে কেউ তার বিরুদ্ধাচারণ করতে বিন্দুমাত্র সাহস পেতেন না। চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের নিকট “মুফতি সাহেব” নামে সুপরিচিত। তাকে এই অঞ্চলের আলেম ওলামা ও পীর মাশায়েখগণ “মুফতিয়ে চাঁটগাম” উপাধিতে ভূষিত করেন। তিনি বেশ কিছুদিন মায়ানমারে অবস্থান করেন। যার ফলে বার্মার থান্ডি সাহেবের মাদরাসার উপাধ্যক্ষ ও মসজিদের খতীব ছিলেন। ১৯৩৮ সালে তার পিতা মারা গেলে তিনি বার্মা হতে দেশে ফিরে আসেন। তিনি দেশে এসে নিজ এলাকায় তার শিক্ষক মাওলানা নজীবুল্লাহ (রহ) কতৃক প্রতিষ্ঠিত চন্দনাইশে হাশিমপুর মকবুলিয়া সিনিয়ার মাদ্রাসাটি পুনঃ প্রতিষ্ঠা করে ১৯৩৯ সাল হতে ১৯৫৭ পর্যন্ত অধ্যক্ষ ছিলেন। এবং পরবর্তীতে নিজ বাড়ীর পাশে জোয়ারা ইসলমিয়া ফাজিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ পদে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সহিত নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করেন। অবসর গ্রহণ করলেও ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত মাদরাসার বিভিন্ন কাজে অবদান রাখেন। উক্ত মাদরাসার প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে তাঁকে অনেক প্রতিকূলতার মোকাবেলা করতে হয়। তবুও তিনি হার মানেননি। কখনো কারো সাথে পরাজয়ের সুরে কথা বলেন নি। কারো কাছে কোনো আত্মসমর্পন করেননি। মাদরাসা পরিচালনার জন্যে তিনি কখনো কোন বিত্তশালীর কাছে বিনীত সূরে সাহায্য প্রার্থনা করেননি, বরং স্থানীয় জনগণ ও দুর-দুরান্তের ভক্তগণ তাঁর প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে নিজস্ব উদ্যেগে সাহায্য দেয়ার জন্য তাঁর কাছে আবেদন করেছে বারবার। এমনি কি মুফতি সাহেব মাদরাসার উন্নয়নে নিজের অর্থ ব্যয় করতে পিছপা হতেন না।
মুফতি শফিউর রহমান (রহ) ০৬ই রমজান,১৪১৫ হিজরী মোতাবেক ০৭ই ফেব্রুয়ারী ১৯৯৫ সালে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সান্নিধ্যে চলে যান।
(২) মাওলানা মাহমুদুর রহমান (রহ):
তিনি নিজ পিতার নিকট প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করার পর তাঁর পিতা মায়ানমারের আকিয়াবে অবস্থান করার সময় মাওলানা সুলতান আহমেদের নিকট শিক্ষা গ্রহণ করেন। তার পিতা দেশে ফিরে আসার পর তিনি হাশিমপুর মকবুলিয়া ফাজিল মাদরাসায় কিছুকাল অধ্যায়ন করেন। অতঃপর তিনি নাজিরহাট জামিয়া মিল্লিয়া আহমদিয়া মাদরাসায় অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম দারুল উলূম মাদরাসায় ভর্তি হন এবং সেখানে যথাক্রমে ১৯৫১ আলিম, ১৯৫৩ সালে ফাজিল এবং ১৯৫৫ সালে কামিল কৃতিত্বের সাথে পাস করেন।তিনি ছাত্রজীবন সমাপ্ত করার পর তার পিতা কতৃক প্রতিষ্ঠিত জোয়ারা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় ১৯৫৭ সালে উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। তখন পিতা মুফতি শফিউর রহমান অধ্যক্ষ পদে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭২ তার পিতা অবসর গ্রহণ করার পর তিনি কৃতিত্বের সাথে অধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া তিনি ১৯৬৫ সালে মাদরাসা-ই-আলিয়া,ঢাকায় ইমাম প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠানকালে মুফতি সৈয়দ আমীমুল ইহসান (রহ) এর সান্নিধ্য লাভ করেন। এ সময় তিনি তাঁর নিকট বায়আত হন। এমন কি মাওলানা মাহমুদুর রহমান “জামিয়াতুল মুদাররেসীন” সংস্থার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২৫ শে মহররম, ১৪২৬ হিজরী/৮ই মার্চ, ২০০৫ সালে তার প্রভুর ডাকে সাড়া দেন।
(৩) মাওলানা আমিনুর রহমান (রহ):
অধ্যক্ষ আল্লামা আমিনুর রহমান ১ মার্চ ১৯৬৫ সালে চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ পৌরসভা এলাকার মাওলানা মঞ্জিলের সম্ভ্রান্ত ঐতিহ্যবাহী আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুর রহমান (রহ)। তার দাদার নাম অধ্যক্ষ মুফতি মাওলানা শফিউর রহমান। মাওলানা আমিনুর রহমান বাল্যকালে তাঁর দাদা মুফতি শফিউর রহমান (রহঃ) ও তাঁর পিতা মাওলানা মাহমুদুর রহমান (রহঃ) এর তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে দাখিল পরীক্ষায় ১ম বিভাগ ২য়, ১৯৭৯ সালে আলিম পরীক্ষায় ১ম বিভাগ ৩য়, ১৯৮১ সালে ফাজিল পরীক্ষায় ১ম বিভাগ ৫ম স্থান, ১৯৮৩ সালে মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকা হতে কামিল হাদীস পরীক্ষায় ১ম শ্রেণি ৩য় স্থান, ১৯৮৪ সালে মাদ্রাসা-ই-আলিয়া,ঢাকা হতে কামিল ফিকহ পরীক্ষায় ১ম শ্রেণিতে ১ম স্থান , ১৯৮৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক বিভাগ হতে এম.এ ১ম পর্ব ১ম বিভাগ ১ম স্থান, ১৯৯০ সালে এম.এ ফাইনাল পরীক্ষায় ১ম বিভাগ ২য় কৃতিত্ব সহিত উত্তীর্ণ হন।
মাওলানা আমিনুর রহমান ১৯৮৫ সালে উপাধ্যক্ষ ও ২০০২ সালে হতে আমৃত্যু পর্যন্ত অধ্যক্ষ পদে জোয়ারা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় সুনাম ও সুদক্ষ সহিত নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ০৭ মার্চ ১৯৯৫ মরহুম মাওলানা মুহাম্মদ ফখরুদ্দীন রহ: (তিনি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় সাবেক মুহাদ্দিস,সিলেট আলিয়া মাদ্রাসায় সাবেক অধ্যক্ষ,চুনতী হাকিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় শায়খুল হাদীস পদে নিয়োজিত ছিলেন।)’র বড় মেয়ে মোছাম্মৎ নুরুন নাহার পারভীনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার শ্বাশুড়ির নাম ফাতেমা বতুল। তাঁর নানা শ্বশুর আল্লামা আব্দুন নূর সিদ্দিকী (রহ)ও একজন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন এবং অলীয়ে কামেল ছিলেন। মাওলানা আমিনুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাস্টার্স শেষ করার পর মাদীনা ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপে সুযোগ পায়। কিন্তু তিনি তাঁর দাদা মুফতি শফিউর রহমানের নির্দেশে সেখানে না গিয়ে তাঁর দাদার প্রতিষ্ঠিত জোয়ারা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যোগদান করেন। তিনি একজন আলা হযরত গবেষক,রেযা প্রেমিক, রেজভী সাহিত্যচর্চার একনিষ্ঠ সেবক, কাদেরিয়া রেজভীয়া তরিকতের বিশিষ্ট খাদেম হিসেবে মাযহাবে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের প্রচার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছিলেন।
তিনি ছাত্রজীবন থেকে লেখালেখি শুরু করেন।বিভিন্ন ম্যাগাজিন, মাসিক পত্রিকা সহ আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকায় তার প্রবন্ধ-নিবন্ধ, গবেষণা ধর্মী লেখা গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া তিনি অসংখ্য কিতাব অনুবাদ ও রচনা করেন। বিশিষ্ট লেখক,অনুবাদক ও গবেষক অধ্যক্ষ মাওলানা আমিনুর রহমান এর অনুদিত ও লিখিত বইসমূহ-প্রকাশিত: ইসলাম ও খৃষ্টবাদ, ত্রি-রত্ন সেমিনার: প্রতিবেদক, রেফাঈয়া তরীকতের মূলনীতি, গাউছুল আযম খুলনবী (রহ), চারজন বরেণ্য রেজভী গবেষক, মুহাদ্দিসে আযমে পাকিস্তান(রহ), দাওয়াতে খাচ, খন্দানে রেজভীয়া: পরিচিতি, প্রাচ্যবিদগণের নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতিত্ব, তরীকতের বিধানাবলীরর মর্মকথা, মাতা-পিতার হক গ্রন্থ পরিচিতি ও লেখক পরিচিতি, হাদীস শাস্ত্রের ইতিহাস, জশনে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম, মুফতী সৈয়দ আমীমুল ইহছান (রহ)’র গ্রন্থবলী, অনুবাদ: আল অজীফাতুল কারীমাহ (মূল: ইমাম আহমদ রেযা খান), মি’রাজুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম, মাশায়েখে কাদেরীয়া রেজভীয়া:পরিচিতি, মুফতী সৈয়দ আমীমুল ইহছান (রহ) আধ্যাত্মিক জীবন, সংক্ষেপে সীরাতে রাসূল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম, ফরয নামাজান্তে মুনাজাতের বিধান, মৃত্যুর পর ঘরে আত্মার আগমন, স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম, নবীগণের জন্য আলায়হিমুছ ছালাম বলা প্রসঙ্গে, আদবে শায়খ ও মুরীদান, মাযারে গম্বুজ নির্মাণে ফায়সালা, বৃদ্ধা আঙ্গুলে চুম্বনের বিধান, ইসলাম, বিজ্ঞান ও ইমাম আহমদ রেযা, সিরাজুম মুনীর, তাওসীফে মিল্লাত এর স্বরণীয় সফরে হজ্ব, মুফতীয়ে আযমে হিন্দ ও তাঁর খোলাফাত, মুফতী আহমদে খান নঈমী : জীবন ও কর্ম, তাজাল্লিয়াতে কুতুবে মাদীনা : জীবন ও কর্ম, সৈয়্যদ আহমদ সাঈদ কাজেমী : জীবন ও কর্ম।
অপ্রকাশিত : গাজ্জালিয়ে জামান, জিয়া এ মাদীনা : জীবন ও কর্ম, ইউসুফ বিন ঈসমাইল নাবহানী:জীবন ও কর্ম, মুফতী সৈয়্যদ আমীমুল ইহসান (রহ):জীবন ও কর্ম, আল্লামা সদরুল আফাজিল: জীবন ও কর্ম, সবুজ গম্বুজ : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ।
উল্লেখ্য তিনি গত ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ রাত ০৮.৩০ ঘটিকায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ডাকে সাড়া দেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজি’উন। ০৭ ডিসেম্বর বাদে আসর জোয়ারা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ঐতিহাসিক ময়দানে তাঁর জানাযা নামায অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের একমাত্র ছেলে আতাউর রহমান রাফির ইমামতিতে উক্ত জানাযার নামাজ সম্পন্ন হয়।
(৪) প্রফেসর এসএম আজগর আলী :
প্রফেসর এস এম আজগর আলী দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নে কেশুয়া গ্রামে ১৯ আগস্ট ১৯৬৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৩ সালে বরকল এস.জেড. হাইস্কুল থেকে এস,এস,সি,১৯৮৬ সালে বোয়ালখালি সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচ,এস,সি কৃতিত্ব লাভ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে ১৮৮৯ সালে বি,এ,(অনার্স), এবং ১৯৯০ সালে এম,এ কৃতিত্ব অর্জন করেন।
প্রফেসর এস এম আজগর আলী মীরসরাই লতিফীয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা,১৫/১০/৯৪থেকে ৩০/১১/৯৭ পর্যন্ত কৃতিত্ব সহিত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১/১২/৯৭ সালে দক্ষিণ চট্টগ্রামের নিজ উপজেলা চন্দনাইশের দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জোয়ারা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ হতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।এছাড়া তিনি মীরসরাই সুফিয়া আলিয়া মাদ্রাসায়,আহমদিয়া করিমিয়া ডিগ্রি মাদ্রাসায় এবং বরকল ছালামতিয়া সুন্নিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় বেসরকারিভাবে পার্ট টাইম কৃতিত্ব সহিত দায়িত্ব পালন করেন।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জোয়ারা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড,ঢাকা কতৃক ১৯৫৯ সালে দাখিল, ১৯৬১ সালে আলিম, ১৯৬৪ সালে ফাজিল এবং ১৯৮৩ সালে বিজ্ঞানের মঞ্জুরী লাভ করে। এরপরে ২০০৬ সালে মাদ্রাসাটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হয়, এবং ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্থানান্তরিত হয়। গরীব অসহায় ও এতীম ছাত্রদের জন্য লিল্লাহ বডিং নামে একটি এতিমখানা রয়েছে।এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বোর্ড পরীক্ষায় বেশ কয়েকবার সারাদেশের সেরা দশে স্থান পেয়েছে। কোন একসময় পুরো দেশকে চমক দেখিয়ে মরহুম মাস্টার হাবিবুর রহমান এর অক্লান্ত পরিশ্রমে স্কাউটে বেশ সুনাম অর্জন করেন। এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা স্কাউট’ এর সর্বোচ্চ পদক “প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড” অর্জন করেছিল। এমনকি খুবই অল্প সময়ে এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জ্ঞান-গবেষণায় খ্যাতি অর্জন করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আগামীতেও ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আরো সমৃদ্ধ ও গৌরবময় করবে।
লেখক :সদস্য, চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র।প্রচার ও প্রকাশনা সচিব, বাংলাদেশ মুসলমান ইতিহাস সমিতি।