বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল -|- ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

সন্ধ্যার পরপরই পরীক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে ইউএনও নিচ্ছেন পড়াশোনার খোঁজখবর; দিচ্ছেন পুরস্কার

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩

 

এরশাদ আলম, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ উল্যাহ, শিক্ষার জন্য নিবেদিত এক প্রাণ, ঘরে ঘরে যেন শিক্ষার আলো জ্বালানোর দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে উপজেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলছেন নিরবধি। ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই যিনি প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত স্বচ্ছতা, সততা, আন্তরিকতা, কর্মদক্ষতা ও দৃঢ়তার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের বেশ আস্থা অর্জন করেছেন। একইসাথে তিনি এই উপজেলায় অনেকগুলো ব্যতিক্রমী শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করে শিক্ষার মানোন্নয়নে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। গত এক বছরে শিক্ষাসচেতন মানুষ, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা তাঁর কার্যক্রমসমূহের সুফল সম্পর্কে দারুণভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। যার ফলে এখন লোহাগাড়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে শিক্ষার দীপশিখা দিন দিন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে উঠছে বলে অনেকে দাবি করেন। করোনায় আক্রান্ত শিক্ষা কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন ও শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ইউএনও যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো ‘সান্ধ্যকালীন হোম ভিজিট’।

২৬ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত ইউএনও শরীফ উল্যাহ ১৫ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাড়িতে ‘সান্ধ্যকালীন হোম ভিজিট’ করেন। আধুনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী মুহাম্মদ রায়হান, সাইদুল আনোয়ার, ফারদিন কবির, ফয়সাল হোসেন ইমন, রবিউল হোসেন হৃদয়, চুনতি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাজিদ ইবনে হাসান, আতাউর রহমান সানি, ফাইরোজ শাহরিন, কাইসান ফারাজ, মারুফুল ইসলাম, মেহেরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের মোহাম্মদ জিসান, মিশকাতুল জান্নাত ডালিয়া তাবাসসুম, ঈশিতা জান্নাত সুবাইতা, মাহিম উদ্দিন সিপন, বাহার উদ্দিন এর বাড়িতে ইউএনও আকস্মিক সান্ধ্যকালীন হোম ভিজিটে যান। শিক্ষার্থীদেরকে বইমুখী এবং পড়াশুনায় মনোযোগী করতে তিনি এ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে জানা যায়। হোম ভিজিটকালে তিনি মূলত শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যার পর যথাসময়ে বাসায় প্রবেশ করেছে কি না, বাড়িতে পড়াশুনা করছে কি না ও সার্বিক প্রস্তুতির খোঁজখবর নেন। অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন। কিছু পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়া পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ ও একটি বই সম্বলিত ‘উইনার্স ব্যাগ’ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সান্ধ্যকালীন এমন আকস্মিক ভিজিটে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। যেসব শিক্ষার্থীর বাড়িতে তিনি গিয়েছেন সেসব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিস্মিত, অভিভূত ও অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন। তারা ধারণাই করতে পারেননি, উপজেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ অফিসার এভাবে সরাসরি ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে ভিজিট করতে চলে আসবেন। তারা মনে করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় এতটাই শিক্ষাবান্ধব যে তিনি অনেকগুলো ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনায় অবিশ্বাস্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। যা শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নেও অনেক বড় ভূমিকা রাখছে। তারা বলেন, এমন কার্যক্রমে আমাদের সন্তানরা পড়াশুনায় আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছে। গত বছরও তিনি অনেক শিক্ষার্থীর বাড়িতে সান্ধ্যকালীন ভিজিট করেছিলেন। প্রশাসনের এমন কঠোর মনিটরিং থাকলে শিক্ষার প্রতিটি স্তরে উন্নতি অবশ্যম্ভাবী।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ‘সান্ধ্যকালীন হোম ভিজিটে’ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জনাব মুহাম্মদ মাহবুব আলম শাওন ভূঁইয়া, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জনাব নুরুল ইসলাম, চুনতি মেহেরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।