রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল -|- ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

পাবনা মানসিক হাসপাতালে ফেলে যাওয়া শিকলে বাঁধা মেয়েটি খুঁজছে তার মা’কে

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯

হয়ত সে মানসিক রোগী নয়।ভাসা ভাসা চোখে চাহুনি তার অপলোক।অবুঝ
অবুঝ মনে কি যেনো খুঁজছে সে।কোথায় তার গ্রাম সেখানে আছে বাবা মা!আছে তার চিরচেনা পরিবার আপন ঠিকানা!

মেয়েটি তার নাম বলছে রুপনা কখনো বলছে লুবনা। লুবনা বলেই সে ফিক ফিক করে হেসে ওঠছে । হিমাইতপুর সৎসঙ্গ আশ্রমের বারান্দায় সে রাজত্ব করছে।মোটামুটি নিজের ঘড় যেমন।নিজের ইচ্ছায় সেখানে তেমন গান গাইছে, নাচ করছে মাঝে মাঝে চুপ নিরবতা আনমনে আকাশ দেখছে।

লুবনাকে প্রায় ২ মাস আগে মানসিক হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছিল তার স্বজনরা। কিন্তু ভর্তি না হওয়ায় পাবনা মানসিক হাসপাতালের কাছেই অবস্থিত শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ আশ্রমের বারান্দায় মায়ের সাথে রাতে আশ্রয় নেয় লুবনা। কিন্ত সকাল বরই নিষ্ঠুর ছিলো
ভোরের আলো ফুটতেই কাউকে না জানিয়ে মেয়েটাকে শিকলে বেঁধে রেখে চলে যায় তার মা।সেই থেকে মেয়েটার ঠাঁই হয়েছে আশ্রমের এই বারান্দায়।শেকল পায়ে বসে থাকে লুবনা। কখনো শেকল খুলে দিলেও কথায়ও যায়না। আশ্রমের কর্মী খোদেজা বেগম ওরফে কৈতুরী বেগম তিনি মায়ের আদরে রেখেছেন মেয়েটিকে। এখন সেই তার দেখভাল করছেন নিজের মেয়ের মতই আগলে রেখেছেন।একবার কৈতুরী বেগম মেয়েটাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টাও করেছিলেন কিন্ত হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী প্রকৃত অবিভাবক ছাড়া রোগী ভর্তি করা হয়না।

আশ্রমের কতৃপক্ষের দায়ীত্বে আছে তাপস কুমার রায় তিনি বলছিলেন, মেয়েটিকে নিয়ে বড়ই বিপদে আছি। একটা ১৮ -২০ বছরের যুবতী মেয়ে এভাবে কতদিন আমরা আশ্রমে রাখতে পারবো! সামনের মাসেই তো আমাদের অাশ্রমের অনুষ্ঠান। তখন কত মানুষ আসবে দেশ বিদেশ থেকে। আমরা সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়বো তখন কে রাখবে এই মেয়েটার খোঁজ।

পাবনা মানসিক হাসপাতালে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানসিক রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসে।কিন্তু গরীব অাসহায় রোগীরা কেউ যদি প্রথম দিনি ভর্তি হতে না পারে তবে তাদের কষ্টের অন্ত থাকেনা।কারো কারো তো রাত্রী যাপনের জন্যে হোটেল ভাড়া দেওয়ার সামর্থ্য নেই। ত কারো কারো ঠিকানা হয় আশ্রমের বারান্দায়।
গত দুই মাসে অনেকবার লুবনার সাথে কথা হয়েছে আশ্রমের কতৃপক্ষ তারা অনেকটা ধারণা করতে পারছেন লুবনার বাড়ি চট্গ্রাম


মেয়েটা তার বাবার নাম বলছে জহির। মামার বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, হাজীপাড়া। মামার মামাবাড়িতে থেকে হাজীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। সম্ভবত বাবা মায়ের মধ্যে সম্পর্ক নেই। তবে এই হাওয়াই ডিজিটেল যুগে এতোটুক তথ্যই কম নয় এতেই হয়তবা মেয়েটিকে তার স্বজনের কাছে নিয়ে যাবে। আমাদের একটু চেষ্টায় লুবনা ফিরে পাক তার অাপন ঠিকানা।

রনি ইমরান
পাবনা।

নিউজটা শেয়ার করার অনুরোধ রইল।