রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল -|- ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

বাঁশখালীতে বড় ভাইয়ের লাঠির আঘাতে ছোট ভাই খুন

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পশ্চিম রায়ছড়া গ্রামের শের মুহাম্মদ বাপের বাড়িতে ভাইয়ের হাতে আপন ভাই খুন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা যায়, ভাইয়ের লাঠির আঘাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবদুল কাইয়ুম (২২)কে প্রথমে বাঁশখালী গুনাগরী আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, ২ দিন যাবত শারীরিক উন্নত না দেখে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চমেককে রেফার করেন। পুলিশি ঝামেলা এড়াতে সু-কৌশলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি না করে নগরীর প্রবর্তক মোড় এলাকার প্রাইভেট হাসপাতাল ট্রিটমেন্ট ভর্তি করা হয়।
দীর্ঘ ৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্তায় শুক্রবার রাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

নিহত আবদুল কাইয়ুম এলাকার মৃত মোঃ ইউসুফের পুত্র। লাশের ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ দাফন সম্পন্ন করে ফেলার অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা।

এদিকে চাঞ্চল্যকর ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হওয়ার ঘটনায় এলাবাসীর মধ্যে তোলপাড় চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে খানখানাবাদের রায়ছড়া গ্রামে গিয়ে চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের সত্যতার খোঁজ মিলে।
এই ব্যাপারে বাঁশখালী থানার পুলিশের (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, খুনের ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবহিত নয়। তবে প্রকৃত সত্যটা জানতে তদন্ত করা হবে বলেও তিনি জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খানখানাবাদ ইউপির রায়ছড়া গ্রামের মৃত ইউসুপের ৪ সন্তানের মধ্যে কনিষ্ট সন্তান খুনের শিকার হওয়া আবদুল কাইয়ুম।

নিহত আবদুল কাইয়ুম দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। গত ১০-১৫ দিন পূর্বে তিনি বাড়িতে ফিরেন। বাড়িতে এসে জায়গা সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারাসহ নিজস্ব পরিচালিত সমিতির টাকার গড়মিল নিয়ে বড়ভাই মোঃ আমানের সাথে দ্বন্ধ বাঁধে। সেই দ্বন্ধের জের ধরে ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার পারিবারিক সালিশী বৈঠকে বসেন ভ্রাতৃদ্বয়। সালিশী বৈঠকে ভ্রাতৃদ্বয়ের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাঁধে।
সেই ঝগড়ার রেশ ধরে ২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে বড় ভাই মোঃ আমান লাঠি দিয়ে ছোট ভাই আবদুল কাইয়ুমের মাথায় আঘাত করলে সেই মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে প্রথমে বাঁশখালী গুনাগরী আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে নিয়ে নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানেই শুক্রবার রাতে ভর্তিরত অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। লাশের ময়না তদন্ত ছাড়া দাফন সম্পন্ন করায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বদর উদ্দীন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বে ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আমার জানা নেই। লাশ দাফনের মধ্যস্থতা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ এনামুল হক বলেন, বাড়ির সীমানা নিয়ে দু’ভায়ের মধ্যে মারামারির ঘটনা শুনেছি। তবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে তা জানি না। লাশ দাফনের মধ্যস্থতায় তিনি ছিলেন কিনা জানতে চাইলে তা অস্বীকার করেন।
রায়ছড়া গ্রামের মোঃ নাছির উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি বলেন, পারিবারিক ও সমিতির দ্বন্দ্ব নিয়ে বড় ভাই আমানের সাথে ছোট ভাই আবদুল কাইয়ুমের সাথে বাগবিতন্ডা হয়েছে। বাগ বিতন্ডার পরের দিন বড় ভাই আমান লাঠি দিয়ে ছোট ভাই আবদুল কাইয়ুমের মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তাছাড়া স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যসহ প্রভাবশালী মহল থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করে বলেও তিনি জানান।
বাঁশখালী গুনাগরী আধুনিক হাসপাতালের ম্যানেজার মোঃ মহিউদ্দিনের কাছে পুলিশ কেইসের রোগী কিভাবে ভর্তি করিয়েছেন জানতে চাইতে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।