রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল -|- ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

লামায় ১৫ বছর বিনা বেতনে চাকরি করে ১৬ শিক্ষক

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিনিধি :
সরকারি ও বেসরকারি কোন ধরনের আর্থিক অনুদান না পাওয়ায় লামা উপজেলার ৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় বিদ্যালয়হীন পাড়া ও গ্রামের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সচেতন মহল নিজেদের অর্থায়নে চারটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

বিদ্যালয়গুলো হল, লামা পৌরসভার নুনারঝিরি, লামা সদরের মিরিঞ্জা, সরই ইউনিয়নের ধূইল্যাপাড়া ও ফাঁসিয়াখালীর কমিউনিটি সেন্টার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাহাড়ি এলাকার এ ৪টি বিদ্যালয়ের ছয় শতাধিক ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করছে এবং স্কুল গুলোতে কর্মরত রয়েছে ১৬ জন শিক্ষক।

মিরিঞ্জা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী মেন্নাই ম্রো জানান, আমরা কোন উপবৃত্তি পাই না। তাই আমালের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে কষ্ট হচ্ছে। একইভাবে এই চারটি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৬শত ছাত্র ছাত্রী সরকার প্রদত্ত উপবৃত্তি পায় না বলে জানা গেছে। ধূইল্যাপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা স্মৃতি রানী দাশ জানান, দীর্ঘ ১৫ বছরের অধিক এক নাগাড়ে বিনা বেতনে বিদ্যালয়ে কর্মরত আছি। বর্তমানে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। নুনারঝিরি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা শাহানাজ পারভীন জানান, দীর্ঘদিন বিনা বেতনে শিক্ষকতা করায় পরিবার-পরিজন নিয়ে ১৬ জন শিক্ষকের পরিবার চরম অভাব-অনটনে পড়ে দুঃখ দুর্দশায় পতিত হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে শিক্ষকগণ শিক্ষকতা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে বিদ্যালয় গুলোতে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

নুনারঝিরি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন জানান, সরকারের জাতীয়করণের সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও এবং জাতীয়করণের তালিকায় নাম থাকার পরেও এই বিদ্যালয় সহ উপজেলার আরো ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়নি।

লামা উপজেলা শিক্ষা অফিসার তপন কুমার চৌধুরী জানান, জাতীয়করণের তালিকা থেকে বাদ পড়া লামা উপজেলার এই চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পিএসসি পরীক্ষায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে। ছাত্র ছাত্রীরা নিয়মিত লেখাপড়া করছে।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ফাতেমা পারুল জানান, বিদ্যালয় গুলো টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি জানান, পিছিয়ে পড়া পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের শিক্ষা নিশ্চিতকরণের জন্য এই চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আর্থিক সহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন।

উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল জানান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আর্থিক সহায়তার মাধ্যমেই লামা উপজেলার বেসরকারি চারটি বিদ্যালয় টিকিয়ে রাখা যেতে পারে। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।