রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল -|- ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
hridoyechattogram.com - news@hridoyechattogram.com - www.facebook.com/hridoyechattogram/

ঘুষ দিতে পারেনি বলে, ছেলের চাকরি হয়নি রাষ্ট্রীয় সম্মান চান না মুক্তিযোদ্ধা

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৯

যে বীর নিজের জীবনের মায়া ছেড়ে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য নয়টি মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, সেই জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তার তার সন্তানকে চাকরির জন্য ‘ঘুষ না দেওয়ায় ছেলের চাকরি হয়নি’।

সেই মহান মানুৃষটি রাষ্ট্রীয় সম্মান চান না।
গত কিছুদিন আগে দিনাজপুরের আরেক জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রীয় সম্মাননেননি ।

অভিমানী এক মুক্তিযোদ্ধা, এবার পঞ্চগড়েও ছেলের চাকরি না হওয়ায় মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান না দিতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন।

২০১৭ সালে (দুই বছর আগের) এক নিয়োগ পরীক্ষায় চাকরি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার আটোয়ারী উপজেলার কাটালী মীরপাড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সলিম উদ্দিন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জেলা প্রশাসক বরাবর এ আবেদন করেন।

আবেদনে বীর বাঙ্গালীর অহংকার দেশও জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিম উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি আটোয়ারী উপজেলায় ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় তার ছেলে সাহিবুল ইসলাম আবেদন করেন। কিন্তু ওই নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মেনে অন্য এক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

পরে অনিয়মের অভিযোগে নিয়োগ কমিটির সভাপতি আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়।
বিচারাধীন অবস্থায় ‘প্রভাবশালী মহল’ মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলে চিঠিতে অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধা সলিম।

এ কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে দাবি করে নিয়োগে অনিয়মের বিচার না হলে মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিতে নিষেধ করেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন আরো বলেন, আমি একজন দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা।
ঘুষ দিতে পারিনি বলে ওরা আমার ছেলের চাকরি দেয়নি। এখানে মুক্তিযোদ্ধা কোটাও মানা হয়নি। যারা টাকা দিয়েছে তাদের চাকরি হয়েছে। আমি এর প্রতিবাদে মামলা করেছি। এজন্য আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে।

আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, নিয়োগের বিষয়টি দুই বছর আগের। নিয়ম মেনেই সবকিছু করা হয়েছে। মামলাটিও যথানিয়মে চলমান। এ ছাড়া এই নিয়োগের একটি স্কুলে ওই এলাকার একজনকেই নিয়োগ দিতে হবে। এজন্য এখানে নিয়ম অনুযায়ী কোটা মেনে নিয়োগের সুযোগ ছিল না।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ছেলের চাকরি হয়নি বলে একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগে বলেছেন, অনিয়মের বিষয়টি বিচার না হলে তিনি মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান চান না। চাকরির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।