আজ ১০ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয়ভাবে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবমাননা করে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে আজ (১নভেম্বর) রবিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত হয়ে ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি করে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। এতে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা ও ছাত্রসেনার কয়েক সহস্রাধিক নেতাকর্মী ও মুসলিম জনতা অংশগ্রহণ করেন।
কর্মসূচির শুরুতে বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব জননেতা আল্লামা এম এ মতিন পাঁচ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মোহাম্মদ (দ.) কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের অপরাধে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত ফ্রান্সের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক চিহ্ন করে বাংলাদেশে অবস্থিত ফ্রান্সের দূতাবাস বন্ধ রাখতে হবে, ফ্রান্সে অব্যাহত নবীজীর অবমাননার প্রতিবাদে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে হবে, মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ফরাসি পণ্য বর্জনে সরকারিভাবে ঘোষণা করতে হবে, ধর্ম অবমাননার মাধ্যমে বিশ্বে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দাতা ফ্রান্স সরকারে বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অবস্থান পরিস্কার করতে হবে, সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনে ফ্রান্সের মুসলমানদের উপর দমন-পীড়ন বন্ধ ও মসজিদসমূহ খোলে দিতে ওআইসি, বিশ্বমুসলিম নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসমূহের জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।
আল্লামা এমএ মতিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে অন্যের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা কোন সভ্য জাতির কাজ হতে পারে না। মত প্রকাশের ক্ষেত্রে অবশ্যই সীমারেখা থাকা উচিত এবং তা লঙ্ঘন করা উচিত নয়। আপনি মতামত ততক্ষণ স্বাধীন, যতক্ষণ তা অন্যকে আঘাত করে না। আমাদের অন্যদের প্রতি সম্মান জানাতে হবে, ফ্রান্স সরকারে বর্তমান উগ্র অবস্থান বিশ্বে শান্তি বিনষ্ট করছে, উগ্রবাদকে উস্কানি দিচ্ছে। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রিয়ভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে। যে মহানবী (দ.) মুসলমানদের নিকট প্রাণের চেয়ে প্রিয়, তাঁর অবমাননা বিশ্ব মুসলমান কখনও মেনে নিবে না।
আল্লামা এম এ মতিন বলেন, বাংলাদেশে ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। তাই এদেশের সরকারকে তাদের অবস্থান জানান দিতে অবিলম্বে ফ্রান্সের নিন্দনীয় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে হবে এবং ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ফ্রান্স দূতাবাস বন্ধ রাখতে হবে। অন্যথায়, সারাদেশের মুসলমান ঈমানী দাবিতে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে।
ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব জননেতা আল্লামা এম এ মতিনের নেতৃত্বে দপ্তর সচিব মাওলানা আবদুর হাকিমের সঞ্চালনায় ঘেরাও কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য দেন-বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নেতা অধ্যক্ষ আবু জাফর মুঈনুদ্দীন, সৈয়দ মুজাফফর আহমাদ মুজাদ্দেদী, কাজী মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন সিদ্দীকি আশরাফী, এডভোকেট কাজী ইসলাম উদ্দীন দুলাল, কাজী মুবারক হোসেন ফরায়েজী, অধ্যক্ষ আল্লামা আব্দুস সাত্তার, মাসুম বিল্লাহ মিয়াজী, গোলাম মাহমুদ ভুঁইয়া মানিক, এডভোকেট ইকবাল হাছান, ডাঃ এস এম সরওয়ার, মুহাম্মদ ইমরান হুসাইন তুষার, কাউসার আহমাদ রুবেল, এডভোকেট হেলাল উদ্দিন, অধ্যক্ষ আবু নাসের মুসা, মুহাম্মদ নূরুল হক চিশতী, মাওঃ বদরুল আলম কাদেরী, লোকমান মিয়াজী, শাহীদুল হক মামুন, মাওঃ আমিনুল ইসলাম আকবরী, তবারক হোসেন, মাওঃ ফরহাদুল ইসলাম বুলবুলি, কাজী মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন নুরী, হাফেজ মুহাম্মদ ওমর ফারুক, মাওঃ আব্বাস উদ্দীন, আল মিরাজ, গোলাম পাঞ্জাতন প্রমুখ।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, মহানবীকে অবমাননা করে ফ্রান্সের বিতর্কিত শার্লি এবদো ম্যাগাজিনে বারবার ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এবার সেই ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়ও বটে। মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই ফ্রান্স সরকারের এহেন কর্মকাণ্ডে নিন্দা জানাতে হবে। প্রাণাধিক প্রিয়নবীর অপমান, কোন মুসলমান সইবে না। তাই আজ আমরা রাজপথে। সরকার আমাদের দাবি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে দেশব্যাপি আমাদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে।
ঘেরাও কর্মসূচিতে আগত জনতার হাতের ফেস্টুন ও মুখে স্লোগান ছিল- প্রিয়নবীর অপমান- সইবেনা মুসলমান, ফরাসীপণ্য বয়কট কর-করতে হবে, অলি-আল্লাহর বাংলায়- নবীদ্রোহীদের ঠাঁই নাই, বিশ্ব মুসলিম ঐক্য গড়ো- ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করো।